এস এম হৃদয় রহমান : বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। এদেশে সবারই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার অধিকার রয়েছে। তাই বলে সবাইকে কেন সরকারি দল করতে হবে? রাজনীতির প্রধান উদ্দেশ্য জনগনের সেবা করা। জনগনের সেবা সরকারি দল ব্যতিত অন্য কোন রাজনৈতিক দলে থেকেও সম্ভব। তবে কমিউনিস্টরা এই বিবেচনার বাইরে, কারণ পৃথিবীর বেশিরভাগ কমিউনিস্ট যারা ক্ষমতায় এসেছেন তারা সব সময়ই একনায়কতন্ত্রকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন এবং একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থা জারি করেছেন। কমিউনিস্টদের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না ই বা যাওয়া গেল।
বাংলাদেশের মূলধারার গণতান্ত্রিক রাজনীতি যা দেশের জন্য মঙ্গলকর সেরকম রাজনীতি এখন সবার আদর্শের কেন্দ্র বিন্দুতে থাকা উচিত। একটি ভাল বিরোধী দল দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসে। সমাজে কিছু কিছু ব্যক্তি আছেন যারা শুধুমাত্র সুযোগ-সুবিধার আশায় সরকারি দলের রাজনীতি করে থাকেন। শুধুমাত্র সুযোগ-সুবিধার আশায় সরকারি দলের সঙ্গে রাজনীতি করা রাজনীতির উদ্দেশ্য হতে পারে না। রাজনীতির উদ্দেশ্য জনগনের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার মাধ্যমে পালিত হয়। তা সরকারি দল ছাড়াও বিরোধী দলের মাধ্যমেও হতে পারে।
সরকারি দল এবং সরকারের সিদ্ধান্ত অনেক সময় জনগনের স্বার্থের বিরোধীও হতে পারে। সে সময় সরকার কে এবং সরকারি দলকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য এবং গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনার জন্য একাধিক বিরোধী দলের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপকতা রয়েছে। রাজনৈতিক নেতা এবং কর্মীদের চিন্তা চেতনায় দেশের জনগনের স্বার্থ থাকবে সবার আগে।
বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক দল রয়েছে যাদের নেতা-কর্মী-সমর্থক সংকট রয়েছে। অথচ তারাই যখন একসময় ক্ষমতায় ছিলেন তাদের দলগুলো ছিল নেতাকর্মী এবং সমর্থকে ভরপুর। ক্ষমতার পালাবদলে অনেকেই হারাতে বসেছেন তাদের রাজনৈতিক নেতা,কর্মী ও সমর্থক। আবার অনেকে ক্ষমতায় ছিলেন না তাদের দলগুলোতেও কর্মী সংকট রয়েছে। অথচ সরকারি দলে নেতা-কর্মী এবং সমর্থক এত পরিমানে বেড়েছে যে তাদেরকে জায়গা দেয়ার মত জায়গা পাওয়া যচ্ছে না।
ক্ষনিকের ক্ষমতা এবং সুযোগ-সুবিধার জন্য দল পাল্টিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় আসে সেই সরকারি দলের সঙ্গে রাজনীতি করা কোন ব্যক্তির জন্যই সম্মানজনক নয়। ক্ষনিকের ক্ষমতা এবং সুযোগ-সুবিধার আশায় সবাই যদি সরকারি দলের রাজনীতি করা শুরু করে তাহলে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয় এবং একদলীয় ব্যবস্থার সূত্রাপাত ঘটে।
লেখক: ফ্রিল্যান্স সংবাদকর্মী, ঢাকা।