তিনি ছিলেন, তিনি আছেন!

নিউজ ডেস্ক: প্রতি বছর দিনটিতে আড়ম্বরের সঙ্গে পরিবার-ভক্ত-অনুরাগীরা হুমায়ূনকে স্মরণ করেন। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে ক্যানসারে সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
তবে করোনায় বদলে যাওয়া সময়ে সব আয়োজনই হবে সীমিত আকারে। জানা গেছে, বরাবরের মতো দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে হুমায়ূন আহমেদের জন্মস্থান নেত্রকোনা এবং লেখক নির্মিত নন্দনকানন গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে। টিভি চ্যানেলগুলোতেও থাকছে তার নাটক, চলচ্চিত্র, গান ও সাহিত্য নিয়ে দিনভর বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবার চাকরির সুবাদে স্কুল জীবন কেটেছে দেশের নানান জেলায়। ১৯৬৭ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (রাজশাহী বিভাগে মেধাতালিকায় দ্বিতীয়), ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৭২ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশ পায়। তখন তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’। এই দুটি বই প্রকাশের পর হুমায়ূন আহমেদ একজন শক্তিশালী কথাশিল্পী হিসেবে পাঠকমহলে সমাদৃত হন। সেই থেকে জীবিতকালে তার দুই শতাধিক বই প্রকাশিত হয়।

হুমায়ূনের ভিন্নধর্মী দুটি চরিত্র হিমু ও মিসির আলী বাংলা সাহিত্যে পেয়েছে স্থায়ী আসন। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে— নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, ফেরা, প্রিয়তমেষু, আকাশ জোড়া মেঘ, সাজঘর, এইসব দিনরাত্রি, অয়োময়, বহুব্রীহি, নীল অপরাজিতা,

আশাবরী, জলপদ্ম, কৃষ্ণপক্ষ, জনম জনম, মন্দ্রসপ্তক, তিথির নীল তোয়ালে, নবনী, যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ, শ্রাবণ মেঘের দিন, গৌরীপুর জংশন, পেন্সিলে আঁকা পরী, কবি, আমাদের শাদা বাড়ি, অপেক্ষা, মেঘ বলেছে যাব যাব, তেতুল বনে জোছনা, নীল মানুষ, মধ্যাহ্ন, অমানুষ, অন্যদিন, চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক, আগুনের পরশমণি, জোছনা ও জননীর গল্প এবং দেয়াল।

হুমায়ূন আহমেদ শিক্ষকতায় ছিলেন দীর্ঘদিন। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। লেখালেখিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে শিক্ষকতা থেকে তিনি অবসর নেন। শিল্প-সংস্কৃতির প্রসারে হুমায়ূন আহমেদ গাজীপুরে প্রতিষ্ঠা করেন নুহাশপল্লী।

তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তবে তার টেলিভিশন নাটকগুলো ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশি না হলেও তার রচিত গানগুলোও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে।

শেয়ার করুন :