আকাশছোঁয়া ডেস্ক : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (চসিক) প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। খোরশেদ আলম সুজনকে এই সিটির প্রশাসক পদে নিয়োগ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্থানীয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। বর্ষীয়ান এই নেতা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
চসিকের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগে এই দায়িত্ব পেলেন তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে রেজাউল করিমকে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ, যিনি নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন পিছিয়ে গেছে। এ কারণে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
এতদিন চট্টগ্রাম সিটির মেয়র পদে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি এবার মনোনয়ন পাননি।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন (সিটি করপোরেশন) আইনে বলা হয়েছে, করপোরেশনের প্রথম সভার তারিখ থেকে পাঁচ বছর হবে এর মেয়াদ। আর করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়োর আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে।
আ জ ম নাছির চট্টগ্রামের মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৫ সালে ৬ অগাস্ট। সে হিসাবে এ সিটির বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৫ আগস্ট।
মেয়াদপূর্তির ১৮০ দিনের মধ্যে এ সিটির নির্বাচন করতে ২৯ মার্চ ভোটের তারিখ রেখে তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু মহামারীর কারণে ভোটের সপ্তাহ খানেক আগে ২১ মার্চ তা স্থগিত করা হয়।
পরে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগকে এক চিঠিতে বলে, বর্তমানেও করোনা প্রভাব অব্যাহত থাকায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবং অতি বৃষ্টি ও পাহাড় ধসের আশঙ্কা বিবেচনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়াদকালের মধ্যে অর্থাৎ ৫ অগাস্টের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না বলে কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
এই অবস্থায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের যে প্রশাসক বসানো হবে, তা সেদিনই জানিয়েছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। এছাড়া সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরের ৫৫ পদে ২৬৯ প্রার্থী রয়েছেন ভোটে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে প্রশাসক বসানো হলেও সুবিধাজনক সময়ে মন্ত্রণালয় অনুরোধ করলে নির্বাচন কমিশন ভোটের তারিখ নির্ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান প্রার্থীরাই বহাল থাকবেন।
মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন (মিনার), এনপিপির আবুল মনজুর (আম), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র খোকন চৌধুরী (হাতি)।
নতুন প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়া খোরশেদ আলম সুজন ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে চবি থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরি সায়েন্সে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে ১৯৮৬ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
প্রায় ৫০ বছরের বর্ণিল রাজনীতিক ক্যারিয়ারে অনেকবার সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ এলেও তা বারবারই হাতছাড়া হয়েছে তার। অবশেষে জীবনের শেষবেলায় এসে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলেন।